আল্লাহর নিকট প্রিয় নামসমূহ (ছেলে ও মেয়েদের) সহ হাদিস ভিত্তিক ব্যাখ্যা

আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হলো আবদুল্লাহ, আব্দুর রহমান ও সহিহ হাদিসভিত্তিক নামসমূহ। মেয়েদের প্রিয় নাম এবং আমাতুল্লাহ, আমাতুর রাহমান ইত্যাদির
আল্লাহর নিকট প্রিয় নামসমূহ (ছেলে ও মেয়েদের) | সুন্দর ইসলামিক ব্যাখ্যা

আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম (পুরুষ ও নারী) এবং মেয়েদের নাম আমানুল্লাহ/আমাতুর রাহমান রাখা

প্রশ্ন: রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সবচেয়ে উত্তম নাম হচ্ছে যেগুলো ‘আবদ’ নাম (যেমন: আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান) এবং ‘হামদ’ শব্দযুক্ত নাম (যেমন: মুহাম্মদ, আহমদ)। ” তবে নারীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রিয় নাম কোনগুলো?

উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
"إن أحب أسمائكم إلى الله عبد الله وعبد الرحمن"
“তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম হলো আবদুল্লাহ ও আব্দুর রহমান।” [সহিহ মুসলিম]

প্রশ্নে বর্ণিত “ما عبد وحمد” (যাতে ‘আবদ’ ও ‘হামদ’ আছে) — এ রকম কোনো হাদিস সহিহ সূত্রে প্রমাণিত নয়।

▪️ নারীদের কোন নামটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়?

নারীদের কোনো নাম বিশেষভাবে আল্লাহর কাছে প্রিয়—এমন স্পষ্ট কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যাদের নাম যেমন— ফাতিমা, জয়নব, উম্মে কুলসুম, রুকাইয়া—এগুলো উত্তম নাম।

তাঁর স্ত্রীদের মধ্যেও যেমন: জয়নব নামটি তিনি নিজে বেছে নিয়েছিলেন এবং কিছু মহিলা সাহাবি যাদের নাম ছিল “বাররাহ (নেককার)”—সেগুলো পরিবর্তন করে জয়নব রেখেছিলেন।

জয়নব বিনতে আবু সালামার নাম ছিল বাররাহ। রসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: “তোমরা নিজেদেরকে পবিত্র বলে দিও না, আল্লাহ ভালো জানেন কে প্রকৃত নেককার।”
তখন তাঁরা বললেন: তাহলে কী নাম রাখব?
তিনি বললেন: “জয়নব নাম রাখো।” [সহিহ মুসলিম]

জয়নব বিনতে জাহশ ও জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস—এদের নামও বাররাহ ছিল, সেগুলো বদলে যথাক্রমে জয়নব ও জুওয়াইরিয়া রাখেন।

সারাংশ:

  • পুরুষদের জন্য: আবদুল্লাহ, আব্দুর রহমান— আল্লাহর প্রিয় নাম।
  • নারীদের জন্য: যদিও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি, তবে ফাতিমা, জয়নব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম—এগুলো উত্তম নাম।
  • ‘বাররাহ’ জাতীয় আত্মপ্রশংসামূলক নাম পরিবর্তন করে সহজ ও বিনয়ী নাম রাখাই সুন্নত।
  • কুরআনে উল্লেখিত মরিয়ম এবং সাহাবি ও তাবেয়িদের নামগুলোও প্রিয় নাম হিসেবে গণ্য।

▪️ মেয়েদের নাম 'আমাতুল্লাহ' রাখা:

প্রশ্ন: একজন মেয়ের নাম "আমাতুল্লাহ" (أمة الله) রাখা কি বৈধ? এবং শুধু "আমাহ" (أمة) বলে ডাকা কি জায়েজ?

উত্তর:
আলহামদুলিল্লাহ, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি দরুদ ও সালাম।

  • কোনো আপত্তি নেই মেয়ের নাম "আমাতুল্লাহ" রাখা।
  • তাকে শুধূ "আমাহ" এর পরিবর্তে "আমাতুল্লাহ" পুরো নামে ডাকা উত্তম।
  • তবে শুধু "আমাহ" বললেও শরিয়ত অনুযায়ী কোনো নিষেধ নেই। [Source: Islam Web]

▪️ মেয়েদের নাম 'আমাতুর রাহমান' রাখা:

প্রশ্নকারী: হে শাইখ, আমি কি আমার মেয়ের নাম أمة الرحمان (আমাতুর রহমান) রাখতে পারি?
শাইখ আলবানি: হ্যাঁ, অবশ্যই।
প্রশ্নকারী: সালাফে সালিহিনের যুগে কি এ নাম ছিল?
শাইখ: ওয়াল্লাহি, এখন স্মরণে নেই, তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত জানতে হলে গবেষণা করতে হবে।
প্রশ্নকারী: আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
শাইখ: আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসুন, যাঁর জন্য আপনি আমাকে ভালোবেসেছেন। আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন।

সংক্ষেপ: আমাতুর রহমান নাম রাখা জায়েজ। তবে সালাফদের যুগে প্রচলিত ছিল কি না তা নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।

আল্লাহু আলাম - আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
অনুবাদ: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
#abdullahilhadi

1 comment

  1. Anonymous
    মাশা-আল্লাহ খুব সুন্দর আলোচনা
আপনার কমেন্ট রিভিউ করে দেখা হবে! প্রয়োজনে SalafiArchive কর্তৃপক্ষ আপনার কমেন্ট রিমুভ করার অধিকার রাখে।

Join the conversation

Disqus shortname is missing. Consider reporting about this message to the admin of this blog. It seems you are the admin of this blog, add disqus shortname through Theme HTML editor to enable Disqus comments.

Join the conversation