সন্তানদের তাওহীদ শিক্ষা দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাবলী
নিয়মিত এই প্রশ্নগুলো করুন এবং শিশুদেরকে সঠিক আক্বীদাহ শিক্ষা দিন
১. প্রশ্ন: আল্লাহ কোথায়?
উত্তর: আকাশে (সবকিছুর ঊর্ধ্বে বা আরশের উপরে)।
২. প্রশ্ন: আল্লাহ যে আরশের উপর রয়েছেন, এর স্বপক্ষে কুরআনের দলীল কী?
الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَىٰ
উত্তর: "রহমান (আল্লাহ) আরশের উপর উঠেছেন।"
[কুর‘আনুল কারীমঃ সূরাহ্ (২০) ত্বা-হা, আয়াত নং ৫।]
৩. প্রশ্ন: "اسْتَوَىٰ (ইস্তাওয়া)" শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ঊর্ধ্বে ওঠা ও সমুন্নত হওয়া (বাস্তব অর্থে; রূপক অর্থে নয়)।
আমাদের আক্বীদাহ ও আল্লাহর উদ্দেশ্য
৪. প্রশ্ন: আমরা আমাদের আক্বীদাহ কোথা থেকে গ্রহণ করি?
উত্তর: কুরআন, সুন্নাহ ও আছার (সাহাবা ও তাবেঈনদের বাণী ও কর্ম) থেকে।
৫. প্রশ্ন: আল্লাহ তা‘আলা জিন ও ইনসান (মানুষ)-কে কেন সৃষ্টি করেছেন?
উত্তর: কেবলমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য, তাঁর সাথে কোনো শরীক না করে।
৬. প্রশ্ন: আল্লাহ যে জিন ও ইনসানকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন, এর স্বপক্ষে কুরআনের দলীল কী?
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
উত্তর: "আর আমি জিনজাতি ও মানবজাতিকে 'তারা আমারই কেবলমাত্র ইবাদত করবে' এই উদ্দেশ্য ব্যতীত সৃষ্টি করিনি।"
[কুর‘আনুল কারীমঃ সূরাহ্ (৫১) যারিয়াত, আয়াত নং ৫৬।]
৭. প্রশ্ন: "ইয়াবুদূন" শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: তারা তাওহীদ (একত্ববাদ) প্রতিষ্ঠা করবে এবং আনুগত্য করবে।
তাওহীদ ও শিরক
৮. প্রশ্ন: "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" এর অর্থ কী?
উত্তর: আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মা‘বূদ নেই।
৯. প্রশ্ন: সবচেয়ে বড় ইবাদত কোনটি?
উত্তর: তাওহীদ (একত্ববাদ)।
১০. প্রশ্ন: সবচেয়ে বড় যুলম কোনটি?
উত্তর: শিরক (আল্লাহর সাথে শরীক করা)।
১১. প্রশ্ন: তাওহীদ কী?
উত্তর: ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক করা।
১২. প্রশ্ন: শিরক কী?
উত্তর: আল্লাহর সাথে অন্য কারো ইবাদত করা।
১৩. প্রশ্ন: তাওহীদের কত প্রকার?
উত্তর: তিন প্রকার।
১৪. প্রশ্ন: তাওহীদের প্রকারগুলো কী কী?
উত্তর: রুবূবিয়্যাহ (কর্তৃত্ব ও প্রতিপালন), উবূদিয়্যাহ বা উলূহিয়্যাহ (ইবাদত), এবং আসমা' ওয়াস সিফাত (আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ ও গুণাবলী)।
তাওহীদের প্রকারভেদ
১৫. প্রশ্ন: "তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ"-এর সংজ্ঞা কী?
উত্তর: আল্লাহর কর্মসমূহের ক্ষেত্রে তাঁকে একক করা, যেমন সৃষ্টি করা, রিযিক দেওয়া ও পরিচালনা করা।
১৬. প্রশ্ন: "তাওহীদুল উবূদিয়্যাহ বা উলূহিয়্যাহ"-এর সংজ্ঞা কী?
উত্তর: বান্দাদের কর্মসমূহের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক করা, যেমন দু'আ করা, যবাই করা ও সিজদা করা ইত্যাদি এগুলো কেবল আল্লাহর জন্যই নিসবত করা।
আল্লাহর নাম ও গুণাবলী
১৭. প্রশ্ন: আল্লাহর কি নাম ও গুণাবলী রয়েছে?
উত্তর: হ্যাঁ, তাঁর ঐসব নাম ও গুণাবলী রয়েছে, যা তিনি নিজের জন্য বর্ণনা করেছেন এবং যা নবীজি ﷺ বর্ণনা করেছেন।
১৮. প্রশ্ন: আমরা আল্লাহর নাম ও গুণাবলী কোথা থেকে গ্রহণ করি?
উত্তর: কুরআন ও সুন্নাহ থেকে।
১৯. প্রশ্ন: আল্লাহর গুণাবলী কি মাখলূকের (সৃষ্ট বস্তুর) গুণাবলীর অনুরূপ?
উত্তর: আল্লাহর গুণাবলী তাদের মূলত্বে মাখলূকের গুণাবলীর মতো নয় (যদিও মাঝে মাঝে তাদের নাম একই রকম হতে পারে)।
২০. প্রশ্ন: আল্লাহর গুণাবলী যে মাখলূকের (সৃষ্ট বস্তুর) গুণাবলীর মতো নয়, এর স্বপক্ষে কুরআনের দলীল কী?
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
উত্তর: "কোনো কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।"
[কুর'আনুল কারীমঃ সূরাহ্ (৪২) শূরা, আয়াত নং ১১।]
কুরআন ও পুনরুত্থান
২১. প্রশ্ন: কুরআন কী?
উত্তর: কুরআন হলো আল্লাহ তা'আলার কালাম (কথা)।
২২. প্রশ্ন: কুরআন কি নাযিলকৃত, নাকি সৃষ্ট?
উত্তর: নাযিলকৃত এবং এটি প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কালাম (শব্দ ও অর্থে)।
২৩. প্রশ্ন: আল-বা'ছ (পুনরুত্থান) কী?
উত্তর: মৃত্যুর পর মানুষদের জীবিত করা।
২৪. প্রশ্ন: যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে, তাদের কুফরীর স্বপক্ষে কুরআনের দলীল কী?
زَعَمَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنْ لَنْ يُبْعَثُوا
উত্তর: "কাফিররা ধারণা করে যে, তাদেরকে কখনও পুনরুত্থিত করা হবে না।"
[কুর'আনুল কারীমঃ সূরাহ্ (৬৪) তাগাবুন, আয়াত নং ৭।]
২৫. প্রশ্ন: আল্লাহ যে আমাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন, এর স্বপক্ষে কুরআনের দলীল কী?
قُلْ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتُبْعَثُنَّ
উত্তর: "বলুন, হ্যাঁ, আমার রবের শপথ! তোমরা অবশ্যই অবশ্যই পুনরুত্থিত হবে।"
[কুর'আনুল কারীমঃ সূরাহ্ (৩৪) সাবা, আয়াত নং ৩।]
২৬. প্রশ্ন: "আল-ইসলাম" শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: তাওহীদের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা, তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে অনুগত থাকা এবং শিরক ও তার অনুসারীদের থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।