কুরবানির গোশত অমুসলিমদের মাঝে বিতরণ করার বিধান
প্রশ্ন: আমাদের অমুসলিম প্রতিবেশীদেরকে কুরবানির মাংস দেওয়া কি বৈধ?
উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
অমুসলিমদের, বিশেষ করে যদি তারা আত্মীয়, প্রতিবেশী বা দরিদ্র হয়—তাদেরকে কুরবানির মাংস দেওয়া জায়েজ। এতে কোনো আপত্তি নেই।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
অমুসলিমদের, বিশেষ করে যদি তারা আত্মীয়, প্রতিবেশী বা দরিদ্র হয়—তাদেরকে কুরবানির মাংস দেওয়া জায়েজ। এতে কোনো আপত্তি নেই।
لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
"আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না—তোমাদের সঙ্গে যারা ধর্ম নিয়ে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করেনি—তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে ও ন্যায়ের আচরণ করতে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে পছন্দ করেন।"
[সূরা মুমতাহিনা, আয়াত: ৮]
[সূরা মুমতাহিনা, আয়াত: ৮]
অতএব অমুসলিমকে কুরবানির মাংস দেওয়া এই সদ্ব্যবহারের অন্তর্ভুক্ত যার অনুমতি আল্লাহ দিয়েছেন।
▪️মুজাহিদ (রহ.) বর্ণনা করেন:
"আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর পরিবারে একটি ছাগল জবাই করা হয়েছিল। তিনি বাড়ি ফিরে এসে বললেন: তোমরা কি আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে উপহার দিয়েছ? আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি: 'জিবরাইল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে এত বেশি তাগিদ দিতেন যে, আমি মনে করতাম যে, তিনি তাকে ওয়ারিস (সম্পদের উত্তরাধিকারী) করে দিবেন।'"
[তিরমিজি: ১৯৪৩, সহিহ বলেছেন আলবানি]
"আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর পরিবারে একটি ছাগল জবাই করা হয়েছিল। তিনি বাড়ি ফিরে এসে বললেন: তোমরা কি আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে উপহার দিয়েছ? আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি: 'জিবরাইল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে এত বেশি তাগিদ দিতেন যে, আমি মনে করতাম যে, তিনি তাকে ওয়ারিস (সম্পদের উত্তরাধিকারী) করে দিবেন।'"
[তিরমিজি: ১৯৪৩, সহিহ বলেছেন আলবানি]
▪️ইবন কুদামাহ (রহ.) বলেন:
"কুরবানির মাংস থেকে কোনো কাফেরকে খাওয়ানো জায়েজ। কারণ এটি একটি নফল সদকা। তাই অন্যান্য নফল সদকার মতোই এটি অমুসলিম জিম্মি ও বন্দীকেও দেওয়া যায়।"
[আল-মুগনি, ৯/৪৫০]
"কুরবানির মাংস থেকে কোনো কাফেরকে খাওয়ানো জায়েজ। কারণ এটি একটি নফল সদকা। তাই অন্যান্য নফল সদকার মতোই এটি অমুসলিম জিম্মি ও বন্দীকেও দেওয়া যায়।"
[আল-মুগনি, ৯/৪৫০]
▪️সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটি (১১/৪২৪) বলেছে:
"আমরা কুরবানির মাংস থেকে কোনো কুফরি অমুসলিম, মুচলেকাপ্রাপ্ত (চুক্তিবদ্ধ) কাফির বা বন্দিকে খাওয়াতে পারি। তাকে দেওয়াও জায়েজ—যদি সে দরিদ্র হয়, আত্মীয় হয়, প্রতিবেশী হয় বা তার মনকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা উদ্দেশ্য থাকে...। কারণ আয়াতে সাধারণভাবে বলা হয়েছে:
[সূরা মুমতাহিনা, আয়াত: ৮]
এবং এজন্যই রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসমা বিনতে আবু বকর (রা.)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি তার মুশরিক মাকে সাহায্য করেন, যদিও তখন যুদ্ধবিরতির সময় ছিল।"
"আমরা কুরবানির মাংস থেকে কোনো কুফরি অমুসলিম, মুচলেকাপ্রাপ্ত (চুক্তিবদ্ধ) কাফির বা বন্দিকে খাওয়াতে পারি। তাকে দেওয়াও জায়েজ—যদি সে দরিদ্র হয়, আত্মীয় হয়, প্রতিবেশী হয় বা তার মনকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা উদ্দেশ্য থাকে...। কারণ আয়াতে সাধারণভাবে বলা হয়েছে:
لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
"আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না—তোমাদের সঙ্গে যারা ধর্ম নিয়ে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করেনি—তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে ও ন্যায়ের আচরণ করতে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে পছন্দ করেন।"[সূরা মুমতাহিনা, আয়াত: ৮]
এবং এজন্যই রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসমা বিনতে আবু বকর (রা.)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি তার মুশরিক মাকে সাহায্য করেন, যদিও তখন যুদ্ধবিরতির সময় ছিল।"
▪️শাইখ ইবন বায (রহ.) বলেন:
"যে কাফিরের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ নেই, যেমন নিরাপত্তা প্রাপ্ত (মুস্তাআমান) বা চুক্তিবদ্ধ (মুআহিদ)—তাকে কুরবানির মাংস বা সদকা দেওয়া যায়।"
[মাজমু' ফাতাওয়া: ১৮/৪৮]
Source: islamqa info
"যে কাফিরের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ নেই, যেমন নিরাপত্তা প্রাপ্ত (মুস্তাআমান) বা চুক্তিবদ্ধ (মুআহিদ)—তাকে কুরবানির মাংস বা সদকা দেওয়া যায়।"
[মাজমু' ফাতাওয়া: ১৮/৪৮]
Source: islamqa info
▪️মোটকথা, উপরের আলোচনার সারাংশ হলো যে, কিছু শর্তসাপেক্ষে অমুসলিম প্রতিবেশী, আত্মীয় কিংবা দরিদ্রদের কুরবানির মাংস দেওয়া জায়েজ।
অবশ্য এক্ষেত্রে আলেমদের ভিন্ন মতও রয়েছে। যেমন: ইমাম মালেকের মতে, কাফেরদের থেকে মুসলিমদেরকে দেওয়া অধিক পছন্দনীয়। আর ইমাম শাফেয়ির মতে, ওয়াজিব কুরবানির ক্ষেত্রে কোনো অমুসলিমকে কুরবানির গোশত দেওয়া জায়েজ নয়। কিন্তু নফল কুরবানির ক্ষেত্রে দেওয়া জায়েজ হলেও তা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। [source: Islam web]
✅ সিদ্ধান্ত:
পরিশেষে, আমরা বলব, মুসলিমদের সাথে সদাচরণকারী তথা শত্রুতা পোষণকারী বা যুদ্ধরত নয় এমন অমুসলিম প্রতিবেশী কিংবা নিকটাত্মীয়কে কুরবানির গোশত দেওয়া জায়েজ আছে। বিশেষ করে যদি এর মাধ্যমে তাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার সম্ভাবনা থাকে। অন্যথায় তাদেরকে তা দেওয়া উচিত নয় বরং মুসলিম গরীব-অসহায় মানুষকে দেওয়াই অধিক উপযুক্ত।
তাছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুসলিমদের সার্বিক অবস্থা আমাদের অজানা নয়। অসংখ্য মুসলিম বর্তমান দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির দিনে দু মুঠো খাবারের জন্য কত কষ্ট করে! গোশত-ভাত খাওয়া তো তাদের কল্পনার বিষয়।
তাই কুরবানির সময় আমাদের উচিত, কুরবানির গোশত দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া এবং মুসলিমদেরকে বঞ্চিত রেখে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কাফেরদেরকে দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
অবশ্য পূর্বোক্ত শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজন বোধে তাদেরকে কিছু গোশত দেওয়া নাজায়েজ নয়। বিশেষ করে যদি তারা প্রতিবেশী বা নিকট আত্মীয় হয়।
আল্লাহু আলাম–আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
পরিশেষে, আমরা বলব, মুসলিমদের সাথে সদাচরণকারী তথা শত্রুতা পোষণকারী বা যুদ্ধরত নয় এমন অমুসলিম প্রতিবেশী কিংবা নিকটাত্মীয়কে কুরবানির গোশত দেওয়া জায়েজ আছে। বিশেষ করে যদি এর মাধ্যমে তাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার সম্ভাবনা থাকে। অন্যথায় তাদেরকে তা দেওয়া উচিত নয় বরং মুসলিম গরীব-অসহায় মানুষকে দেওয়াই অধিক উপযুক্ত।
তাছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুসলিমদের সার্বিক অবস্থা আমাদের অজানা নয়। অসংখ্য মুসলিম বর্তমান দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির দিনে দু মুঠো খাবারের জন্য কত কষ্ট করে! গোশত-ভাত খাওয়া তো তাদের কল্পনার বিষয়।
তাই কুরবানির সময় আমাদের উচিত, কুরবানির গোশত দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া এবং মুসলিমদেরকে বঞ্চিত রেখে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কাফেরদেরকে দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
অবশ্য পূর্বোক্ত শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজন বোধে তাদেরকে কিছু গোশত দেওয়া নাজায়েজ নয়। বিশেষ করে যদি তারা প্রতিবেশী বা নিকট আত্মীয় হয়।
আল্লাহু আলাম–আল্লাহই সর্বজ্ঞ।