প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
যিনি (সালাফি আলেম) সহিহ আক্বীদা ও সঠিক মানহাজে অবিচল—তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন, যদিও তিনি বয়সে আপনার চেয়ে (কনিষ্ঠ) ছোট হন। কেননা আল্লাহর কাছে মানুষের প্রকৃত মর্যাদা নির্ধারিত হয় ইলম ও তাকওয়ার ভিত্তিতে, বয়সের ভিত্তিতে নয়। (তবে হা! মুরব্বিদের প্রাপ্য সম্মান দিতেও ইসলাম নিষেধ করেনি)।
আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনু মুহাম্মাদ আল-আনবারী, তিনি বলেন: আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইব্রাহীম আল-আব্দী, তিনি বলেন: আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন ইউসুফ ইবনু আদি, তিনি বলেন: আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন জারীর, তিনি মুগীরা ইবনু আবি রাযীন থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আব্বাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো:
أيما أكبر، أنت أم النبي ﷺ؟ فقال: هو أكبر مني، وأنا ولدت قبله.
কে বড়, আপনি নাকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম? তিনি (আব্বাস রা.) উত্তরে বললেন: তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার চেয়ে বড়, আর আমি তাঁর আগে জন্মগ্রহণ করেছি।
(মুসতাদরাক হাকেম,,খণ্ড: ৬,পৃষ্ঠা: ৪১৩,হাদীস হা/৫৪৮৪, ইমাম হাকিম হাদিসটি সহীহ বলেছেন)।
হাদীসটির মর্মার্থ:
(১).“তিনি আমার চেয়ে বড়”—এখানে 'বড়' বলতে বোঝানো হয়েছে মর্যাদা, গৌরব ও সম্মানের দিক থেকে বড়। অর্থাৎ যদিও তিনি (ﷺ) বয়সে আমার চেয়ে ছোট, তবুও তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল, সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরিত মহান পুরুষ। তাই সম্মান, মর্যাদা ও গৌরবের মানদণ্ডে তিনি (ﷺ) মানবজাতির সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।”
(২).“আমি তাঁর আগে জন্মগ্রহণ করেছি”—এই বাক্যটি নিছক একটি ঐতিহাসিক সত্য। আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্মের প্রায় তিন বছর আগে জন্মগ্রহণ করেছেন। তবে তিনি যখন এই কথা বলেন, সেটি কেবল সময়গত অগ্রাধিকারের নয়, বরং বিনয় ও শ্রদ্ধার অপূর্ব প্রকাশ। তাঁর কণ্ঠে এই বাক্য উচ্চারিত হয় এমন নম্রতায়, যেন তিনি বলতে চেয়েছেন, ‘জন্মে আগে হলেও, মর্যাদায় আমি তাঁর ধূলিকণারও সমকক্ষ সমান নই। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।